ঢাকা ১১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিজয়া দশমী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম পশ্চিম গুজরায় জ্বালা কুমারী তরুণ সংঘে উগ্যােগে দুর্গোৎসব উদযাপন না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক গাজীপুরে হাইওয়ে রোডে দেহ ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি, এলাকাবাসীর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি ঝিনাইদহে বাসচাপায় শিশুসহ ২ জন নিহত রাণীশংকৈলে সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব দুমকীতে পূজা মন্ডপে এনসিপির শুভেচ্ছা বিনিময় বিদায়ের সুরে শ্যামনগরের পূজা মণ্ডপগুলো পটুয়াখালীতে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন শহীদ জিয়া গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ‎ ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আসিফ কাজলের আজ জন্মদিন

কানাডায় আগের স্বামীর কাছে ইভা, সৌরভকে বাসায় ডেকে ৪ টুকরো

নিজেস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪ ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
ময়মনসিংহে আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও প্রধান অভিযুক্ত নিহতের চাচা ইলিয়াস উদ্দিনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্য দুইজন হলেন ইলিয়াসের শ্যালক আসাদুজ্জামান ফারুক ও প্রাইভেট কারের চালক আবদুল হান্নান আকন্দ।

পুলিশ জানায়, গোপনে চাচাতো বোনকে বিয়ে করার ক্ষোভ থেকেই সৌরভকে তার চাচা বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। এ কাজে সহায়তা করেন তার শ্যালক। পরে তারা চাপাতি দিয়ে ওমর ফারুক সৌরভের মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন করেন। প্রাইভেট কারে করে সেই মরদেহ নিয়ে নদীতে ফেলে দেন। চাচাতো বোনের বিষয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

তিনি জানান, গত ১২ মে ওমর ফারুক সৌরভ তার চাচাতো বোনকে ঢাকার একটি বাসায় বিয়ে করেন। মেয়ের বিয়ের বিষয়টি মেনে নেননি ইলিয়াস উদ্দিন। বিয়ের পর ওমর ফারুককে হত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। পরে ১৬ মে তার মেয়েকে কানাডায় পাঠিয়ে দেন। তার মেয়ের তিন বছর আগেই কানাডা প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। আগের বিয়ের কথা জানতে পেরে গত রোববার ময়মনসিংহে আসেন ওমর ফারুক সৌরভ। তিনি চাচাতো বোনের প্রথম স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া চাচাতো ভাই মুঠোফোনে তাকে বাসায় আসতে বলে। নগরের গোহাইলকান্দি এলাকার বাসায় আসার পর ওমর ফারুক সৌরভের মাথায় ছুরি মেরে হত্যা করেন ইলিয়াস ও আসাদুজ্জামান।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা জানান, হত্যার পর মরদেহটি বাসার শৌচাগারে রেখে দেন ইলিয়াস উদ্দিন। রাত ৮টার পর নগরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকা থেকে একটি ট্রলি ব্যাগ কিনে বাসায় যান তিনি। ওই ট্রলি ব্যাগে মরদেহটি গুম করা হয়েছিল। ইলিয়াস উদ্দিনের বাসাতেও তল্লাশি চালিয়ে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

পুলিশ সুপার জানান, শ্যালকের সহায়তায় ইলিয়াস উদ্দিন চাপাতি দিয়ে প্রথমে সৌরভের মাথা ও পরে দুই উরু বিচ্ছিন্ন করেন। পরিচয় যেন শনাক্ত না হয়, সে কারণে তার হাতের আঙুলের চামড়া বিচ্ছিন্ন করেন। হাতে গ্লাভস পরে মরদেহ টুকরা করা হয়। পরে দেহ ও দুই পা ট্রলি ব্যাগে এবং মাথা শপিং ব্যাগে নিয়ে তারা প্রাইভেট কার ভাড়া করেন। সুতিয়াখালী নদীর মনতলা সেতুর নিচে ফেলে পালিয়ে যান তারা।

গত রোববার সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় সেতুর নিচে মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় সৌরভের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাতে গ্রামের বাড়িতে সৌরভের মরদেহ দাফন করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পর থানা-পুলিশ, ডিবিসহ অন্যান্য সংস্থা তদন্ত শুরু করে। কোতোয়ালি থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে মঙ্গলবার ভোরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম থেকে ইলিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আসাদুজ্জামান ও আবদুল হান্নান আকন্দকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা থেকে। মরদেহ গুমের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটিও জব্দ করা হয়েছে।

ওই ঘটনায় সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী বাদী হয়ে গত রোববার রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

কানাডায় আগের স্বামীর কাছে ইভা, সৌরভকে বাসায় ডেকে ৪ টুকরো

আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রিয়াজ মিয়া
ময়মনসিংহে আলোচিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও প্রধান অভিযুক্ত নিহতের চাচা ইলিয়াস উদ্দিনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্য দুইজন হলেন ইলিয়াসের শ্যালক আসাদুজ্জামান ফারুক ও প্রাইভেট কারের চালক আবদুল হান্নান আকন্দ।

পুলিশ জানায়, গোপনে চাচাতো বোনকে বিয়ে করার ক্ষোভ থেকেই সৌরভকে তার চাচা বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। এ কাজে সহায়তা করেন তার শ্যালক। পরে তারা চাপাতি দিয়ে ওমর ফারুক সৌরভের মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন করেন। প্রাইভেট কারে করে সেই মরদেহ নিয়ে নদীতে ফেলে দেন। চাচাতো বোনের বিষয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

তিনি জানান, গত ১২ মে ওমর ফারুক সৌরভ তার চাচাতো বোনকে ঢাকার একটি বাসায় বিয়ে করেন। মেয়ের বিয়ের বিষয়টি মেনে নেননি ইলিয়াস উদ্দিন। বিয়ের পর ওমর ফারুককে হত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। পরে ১৬ মে তার মেয়েকে কানাডায় পাঠিয়ে দেন। তার মেয়ের তিন বছর আগেই কানাডা প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। আগের বিয়ের কথা জানতে পেরে গত রোববার ময়মনসিংহে আসেন ওমর ফারুক সৌরভ। তিনি চাচাতো বোনের প্রথম স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া চাচাতো ভাই মুঠোফোনে তাকে বাসায় আসতে বলে। নগরের গোহাইলকান্দি এলাকার বাসায় আসার পর ওমর ফারুক সৌরভের মাথায় ছুরি মেরে হত্যা করেন ইলিয়াস ও আসাদুজ্জামান।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা জানান, হত্যার পর মরদেহটি বাসার শৌচাগারে রেখে দেন ইলিয়াস উদ্দিন। রাত ৮টার পর নগরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকা থেকে একটি ট্রলি ব্যাগ কিনে বাসায় যান তিনি। ওই ট্রলি ব্যাগে মরদেহটি গুম করা হয়েছিল। ইলিয়াস উদ্দিনের বাসাতেও তল্লাশি চালিয়ে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

পুলিশ সুপার জানান, শ্যালকের সহায়তায় ইলিয়াস উদ্দিন চাপাতি দিয়ে প্রথমে সৌরভের মাথা ও পরে দুই উরু বিচ্ছিন্ন করেন। পরিচয় যেন শনাক্ত না হয়, সে কারণে তার হাতের আঙুলের চামড়া বিচ্ছিন্ন করেন। হাতে গ্লাভস পরে মরদেহ টুকরা করা হয়। পরে দেহ ও দুই পা ট্রলি ব্যাগে এবং মাথা শপিং ব্যাগে নিয়ে তারা প্রাইভেট কার ভাড়া করেন। সুতিয়াখালী নদীর মনতলা সেতুর নিচে ফেলে পালিয়ে যান তারা।

গত রোববার সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় সেতুর নিচে মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় সৌরভের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাতে গ্রামের বাড়িতে সৌরভের মরদেহ দাফন করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের পর থানা-পুলিশ, ডিবিসহ অন্যান্য সংস্থা তদন্ত শুরু করে। কোতোয়ালি থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে মঙ্গলবার ভোরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম থেকে ইলিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আসাদুজ্জামান ও আবদুল হান্নান আকন্দকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা থেকে। মরদেহ গুমের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটিও জব্দ করা হয়েছে।

ওই ঘটনায় সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী বাদী হয়ে গত রোববার রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।