ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শাল্লা থানা পরিদর্শন করলেন সুনাগঞ্জের পুলিশ সুপার যশোরের কপোতাক্ষ লাইন্স হাসপাতালের চেয়ারম্যান হলেন অ্যাডভোকেট দেবাশীষ দাস আপ বাংলাদেশ’র বান্দরবান জেলার আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুলিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের মারপিটে গুরুত্বর জখম-১, থানায় অভিযোগ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের উপর হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন ছাত্র সমাজের ঐক্য ও শিক্ষার মানন্নয়নের ডাক নিয়ে, বিষম্ভরপুরে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুলটিয়ায় তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ঘের খনন, অভিযান চালালেন ইউএনও নিশাত তামান্না সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন এর “শিক্ষক প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে দক্ষিণ মাদার্শা সেবাশ্রমে তিনদিনব্যাপী মহোৎসব অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা

একটি বোমা, একটি নাম, একটি ইতিহাস: গাজায় মোহাম্মদ সিনওয়ারের পতন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

গালিব খাঁন:-

একটি অবহলিত ভূমি‌ এবং দখলকৃত জমি। যেখানে মুসলিমরা একসম ইয়াহুদীদের অসহায় ভেবে জায়গা দিয়েছিলো। অবলা মানুষ হিসেবে বুকে টেনে নিয়েছিলো। কিন্তু তারা মানুষত্ব ভুলে গিয়ে হানাহানি দিল পাকিয়ে। উল্টো তাদের পিঠে খন্জর মারলো যারা তাদের আশ্রয় দিয়েছিলো। তারা আজকের অভাশিপ্ত ইয়াহুদি। যারা কেড়ে নিলো ফিলিস্তিন। আর শেষে আশ্রয়দাতা মুসলিমদেরই করলো পরাধীন।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে চলমান যুদ্ধের ক্রমধারায়
গাজায় ২৯ মে ২০২৫ — একটি বোমা নেমে এলো খানের ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালের ওপর। তার নিচে লুকিয়ে থাকা ছিল এক নাম—মোহাম্মদ সিনওয়ার। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২৮ মে কনেসেটে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন: “আমরা মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যা করেছি।”

মোহাম্মদ, ১৯৭৫ সালে খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান ছিলেন। তার ভাই ইয়াহিয়া সিনওয়ার, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন, ২০২৪ সালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

১৩ মে ২০২৫ তারিখে ইসরায়েলি বাহিনী ইউরোপীয় হাসপাতালের নিচে একটি হামাসের কমান্ড সেন্টার লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। সৌদি চ্যানেল আল-হাদাথ জানায়, সিনওয়ারের দেহ তার ১০ জন সহকারীর সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে।

হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, “সব ইঙ্গিত অনুযায়ী মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন।”

সিনওয়ারের মৃত্যু গাজায় হামাসের নেতৃত্বে একটি শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তিনি ছিলেন হামাসের সামরিক কার্যক্রমের মূল পরিকল্পনাকারী এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তার মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলতে পারে।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস এবং জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫৩,০০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

মোহাম্মদ সিনওয়ারের মৃত্যু একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছে। তিনি ছিলেন একটি আন্দোলনের প্রতীক, একটি জনগণের আশা এবং একটি অঞ্চলের প্রতিরোধের মুখ। তার মৃত্যু গাজায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে অনিশ্চয়তা এবং প্রত্যাশা একসঙ্গে মিশে আছে।

তথ্যসূত্র:

CBS News
Washington Post
Reuters
Wikipedia – Gaza Hospital Strike

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

একটি বোমা, একটি নাম, একটি ইতিহাস: গাজায় মোহাম্মদ সিনওয়ারের পতন

আপডেট সময় : ১১:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

গালিব খাঁন:-

একটি অবহলিত ভূমি‌ এবং দখলকৃত জমি। যেখানে মুসলিমরা একসম ইয়াহুদীদের অসহায় ভেবে জায়গা দিয়েছিলো। অবলা মানুষ হিসেবে বুকে টেনে নিয়েছিলো। কিন্তু তারা মানুষত্ব ভুলে গিয়ে হানাহানি দিল পাকিয়ে। উল্টো তাদের পিঠে খন্জর মারলো যারা তাদের আশ্রয় দিয়েছিলো। তারা আজকের অভাশিপ্ত ইয়াহুদি। যারা কেড়ে নিলো ফিলিস্তিন। আর শেষে আশ্রয়দাতা মুসলিমদেরই করলো পরাধীন।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে চলমান যুদ্ধের ক্রমধারায়
গাজায় ২৯ মে ২০২৫ — একটি বোমা নেমে এলো খানের ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালের ওপর। তার নিচে লুকিয়ে থাকা ছিল এক নাম—মোহাম্মদ সিনওয়ার। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২৮ মে কনেসেটে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন: “আমরা মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যা করেছি।”

মোহাম্মদ, ১৯৭৫ সালে খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জেদিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান ছিলেন। তার ভাই ইয়াহিয়া সিনওয়ার, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন, ২০২৪ সালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন।

১৩ মে ২০২৫ তারিখে ইসরায়েলি বাহিনী ইউরোপীয় হাসপাতালের নিচে একটি হামাসের কমান্ড সেন্টার লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। সৌদি চ্যানেল আল-হাদাথ জানায়, সিনওয়ারের দেহ তার ১০ জন সহকারীর সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে।

হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, “সব ইঙ্গিত অনুযায়ী মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন।”

সিনওয়ারের মৃত্যু গাজায় হামাসের নেতৃত্বে একটি শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তিনি ছিলেন হামাসের সামরিক কার্যক্রমের মূল পরিকল্পনাকারী এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তার মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলতে পারে।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস এবং জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫৩,০০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

মোহাম্মদ সিনওয়ারের মৃত্যু একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছে। তিনি ছিলেন একটি আন্দোলনের প্রতীক, একটি জনগণের আশা এবং একটি অঞ্চলের প্রতিরোধের মুখ। তার মৃত্যু গাজায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যেখানে অনিশ্চয়তা এবং প্রত্যাশা একসঙ্গে মিশে আছে।

তথ্যসূত্র:

CBS News
Washington Post
Reuters
Wikipedia – Gaza Hospital Strike