উত্তরবঙ্গের মানুষদের রেলযাত্রায় দুর্ভোগের শেষ কোথায়

- আপডেট সময় : ০১:১৩:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোটার:
উত্তরবঙ্গের জেলা গাইবান্ধার বাসিন্দা রাসেল সরকার অন্তর। পড়াশোনা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের একটি ডিপার্টমেন্টে। ঈদের ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন বাড়িতে৷ আজকে লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা লালমনি এক্সপ্রেসে করে ফিরছেন ঢাকার উদ্দেশ্যে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কেমন ছিল তার ঢাকায় ফেরার অভিজ্ঞতা-
এক. ট্রেন গাইবান্ধা স্টেশনে আসার কথা ছিল বেলা ১১:৩৭ এ। অথচ গাইবান্ধা স্টেশনে এসে পৌঁছেছে দুপুর ১২:১০ এরও পর।
দুই. ট্রেনে উঠতে বগির গেইট ফাঁকা ছিলনা। অনেক কষ্টে ধাক্কাধাক্কি করে ঢুকেছেন নির্দিষ্ট বগিতে। কিন্তু নির্দিষ্ট সিট খুঁজে পেতেও বিড়ম্বনার শেষ নেই। বহুচেষ্টার পর ভীড় ঠেলে বসলেন তার নির্দিষ্ট আসনে। তারপরও রক্ষা নেই; তার সামনে ব্লক করে দাঁড়িয়ে আছেন আরও ৩-৪ জন, ব্যাগ রাখার জায়গায় যে ব্যাগ রাখবেন সে সুযোগও নেই একদমই।
তিন. যাই হোক, তিনি মোটামুটি বসতে পেরেছেন৷ কিন্তু কিছুদূর আসতে না আসতেই ট্রেন থামলো। জানা গেলো, গাড়িতে সমস্যা হয়েছে! প্রচণ্ড গরমে থেমে গেলো তার ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। গরমে হাঁপানোর মতো অবস্থা যাত্রীদের!
চার. তার একটু পরই ঢাবি ছাত্র অন্তর ফেসবুকে আপডেট দিলেন, গাইবান্ধা থেকে সোনাতলা আসতে না আসতে ভীড়ের মধ্যে একই গেইট থেকে দুই যাত্রীর ফোন চুরি হয়েছে।
পাঁচ. মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি ওয়াশরুমে যাবেন। কিন্তু ভীড়ের কারণে যেতে পারছেন না। কষ্ট করে গেলেন ঠিকই কিন্তু লাভ হলো না! সেখানেও ব্যাগ চাপিয়ে জায়গা দখল করে রেখেছে জনৈক যাত্রী!
ছয়. তিন ঘণ্টা পার হয়ে যাবার পরও টিকিট চেক করার জন্য রেলওয়ে টিটি আসেনি। যার কারণে টিকিট ছাড়াই উঠে ভীড় করছেন অনেক যাত্রী, আবার রেলের নির্দিষ্ট ভাড়া পরিশোধ না করে নেমেও যাচ্ছেন তারা। কিন্তু মাঝখান দিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে টিকিট কেটে ওঠা যাত্রীদের!
সাত. জনাব অন্তর জানালার পাশে সিট নিয়েছেন। এমনিতেই এই গ্রীষ্মে সূর্যের অনেক তাপ, তার ওপর ভীড়ের কারণে গরমের হাত থেকে বাঁচতে খোলা রেখেছেন জানালা। এতক্ষণে বাইরে থেকে আসা ধূলোয় ছেয়ে গেছে তার মুখ ও পোশাক। যেমনটা তিনি একটু উপহাস করেই বলছিলেন, “ঢাকায় ভূত হয়ে ফিরতে হবে!”
আট. অন্তর জানালেন, গাইবান্ধা থেকে ট্রেনে ঢাকায় পৌঁছতে যেখানে রেলওয়ের সময় অনুযায়ী আট ঘণ্টা লাগার কথা, নানাবিধ অনিয়মের কারণে সেখানে দশ ঘণ্টায়ও ঢাকাহ পৌঁছতে পারবেন কীনা নিশ্চিত নন তিনি!
ট্রেনে দুর্নীতি, অনিয়ম, কালোবাজারি প্রভৃতি সমস্যা কি কখনও ঠিক হবে না! জনাব অন্তরের মতো রেলপথের যাত্রীদের দুর্ভোগের কি কোনো সুরাহা মিলবে না!