ঢাকা ১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পূ’জা’র ছুটিতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে ধর্মীয় সহনশীলতা ছাড়া রাষ্ট্রের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করার সম্ভব নয়’চেয়ারম্যান মঞ্জু আলমডাঙ্গায় পূজামণ্ডপে শামসুজ্জামান দুদু দুমকিতে মা ইলিশ সংরক্ষণে প্রস্তুতিমূলক সভা  নিবন্ধন ব্যতীত সার মজুদ রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা গাজীরহাট পূজা মন্ডপ পরিদর্শক ও মতবিনিময় করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ চুরির অভিযোগে কিশোরকে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল বাকৃবিতে ‘দেশে খাদ্য পুষ্টি সমৃদ্ধকরণের গুরুত্ব’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মৃত্যুর চেয়েও মারাত্মক সময় অপচয়: সফল জীবনের পথে সতর্কবার্তা ১৩ বছরে কোন পুঁজোয় একটা সিঁদুরের কৌটাও ভাগ্যে জোটেনি নীলফামারীর সমিতার: তবুও ফিরতে চান স্বামীর সংসারে

ঈদে আমাদের করণীয় ও বর্জনীয় মোহাম্মদ ইউসুফ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪ ৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজেস্ব প্রতিনিধি:

ঈদ মানেই হাসি-খুশি আর আনন্দ। ঈদের দিন মুসলমানরা আনন্দ উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সঃ)ঘোষণার মাধ্যমেই দ্বিতীয় হিজরীতে ঈদ উৎসবের গোড়াপত্তন হয়। আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ( সাঃ) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় এলেন, তখন তিনি দেখলেন, সেখানকার মানুষ বছরে দু’টি নির্দিষ্ট দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ উপভোগ করে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ দু’টি দিন কেমন? তারা বলেন, আমরা ইসলাম আগমনের পূর্বে এ দু’টি দিনে খেলা-তামাশা ও আনন্দ উপভোগ করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, আল্লাহ এ দু’টি দিনের পরিবর্তে দু’টি উৎকৃষ্ট দিন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। একটি ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি ঈদুল আজহা। (আবু দাউদ, নাসায়ী)।আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঈদ অর্থ বারবার ফিরে আসা। তবে শব্দটি উৎসব অর্থে প্রসিদ্ধি পেয়েছে। এমনকি পবিত্র কুরআনেও শব্দটি আনন্দঘন উৎসব অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ঈদ কেবল আনন্দ উৎসবের নাম নয়, বরং ইবাদত-বন্দেগির দ্বারা মহান আল্লাহর অনুগ্রহ, ক্ষমা ও সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম। ঈদুল ফিতরের এই আনন্দ উৎসবও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আর ইবাদতময় এই আনন্দ উৎসব থেকে আরও কল্যাণ লাভের জন্য প্রয়োজন হলো মহান আল্লাহর বিধান এবং রাসুল (সা.) এর সুন্নতের অনুসরণ। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে ঈদের প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং যেভাবে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন আমাদের জন্যও করণীয় হলো সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া এবং উদ্‌যাপন করা। ঈদের দিন বেশ কিছু আমল রয়েছে, যার মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়। একই সঙ্গে সমাজে প্রচলিত কিছু কাজ রয়েছে, যার সঙ্গে ঈদের কোনো সম্পর্ক নেই।
ঈদ মুসলমানদের একটি ওয়াজিব ইবাদত,তাই ঈদে আনন্দ উৎযাপন করার পদ্ধতি হতে হবে হালাল এবং রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত তরীকায়।
ঈদে আমাদের যা করণীয় :
আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া এবং তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সকল প্রকার মনোমালিন্য দূর করার জন্য ঈদ হল একটা বিরাট সুযোগ। এমনকি কেউ বিচ্ছিন্ন থাকলেও তার সঙ্গে অন্যরা যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সাঃ) বলেন, ‘যে আখেরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে। ’
ঈদুল ফিতর উৎসবের একটি তাৎপর্যময় অঙ্গ হলো ফিতরা বিতরণ।গরিব দুঃখীর মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম সদকাতুল ফিতর। সমাজের দুস্থ, অসহায়, দরিদ্ররাও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন, সে জন্য সদকাতুল ফিতর বা ফিতরার বিধান।
প্রত্যেক সমর্থ্য মুসলমানের জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই এই ফিতরা পরিশোধ করতে হবে। ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ‘প্রিয়নবী (সাঃ) লোকেদের ঈদের নামাযের জন্য বের হওয়ার পূর্বে ফিতরার যাকাত আদায় দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
ঈদে প্রত্যেকের জন্য নতুন পোশাক ও বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকে তাই এতিম ছেলে-মেয়েরাও এই দিনে বিশেষ আশা নিয়ে থাকে নতুন পোশাক ও বিশেষ খাবারের। ঈদের দিন এতিমের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের খাবার খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে তাদের নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দিতে সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসতে হবে।
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষকে খুশি করা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। তাছাড়া ইসলামে উপহার লেনদেন করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা এতে পারস্পারিক ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
এছাড়াও ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকে তাকবির পাঠ করা, ঈদের দিন গোসল করা, নতুন বা পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা,ঈদের দিন ফজরের নামাজ আদায় করা, ঈদগাহে যাবার পূর্বে কিছু খাওয়া, হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া, ঈদের খুতবা শ্রবণ করা সুন্নত।
ঈদে আমাদের যা বর্জন করতে হবে:
কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঈদ উপলক্ষে সবকিছুতেই অপচয়-অপব্যয় করা,অশ্লীল পোষাক পরিধান করা,ঈদের সালাত আদায় না করে কেবল আনন্দ ফুর্তি করা, ঈদের আনন্দে মদ খাওয়া, জুয়া খেলা, আতশবাজি করা,আত্মীয়স্বজনের খোঁজ না রাখা,ঈদের আনন্দের অজুহাতে ঈদের দিন বাদ্যযন্ত্র বাজানো, নাচানাচি করা,বিনোদনের নামে খোলা ট্রাকের উপর ডিজে পার্টিতে হৈ-হুল্লোড় করে গান-বাজনা করা, পটকা ফুটানো এই ধরণের নিষিদ্ধ কাজগুলে থেকে বিরত থাকতে হবে।ঈদে এমন কোন কাজ করা যাবে না যাতে আশেপাশের মানুষেরা কোনভাবে কষ্ট পায়। এছাড়া ঈদের দিন আনন্দের নামে যে কোনো ধরনের অশ্লীল কাজ-কর্ম বর্জন করা মুমিন মুসলমানের জন্য আবশ্যক।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এই পত্রিকার মূল স্লোগান হলো "সত্য প্রকাশে আপোষহীন"।আমরা এ দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের কথা বলি।একজন অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে অন্যায় প্রতিরোধে সাহায্য করতে আমরা সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা গনমানুষের কথা বলে।
ট্যাগস :

ঈদে আমাদের করণীয় ও বর্জনীয় মোহাম্মদ ইউসুফ

আপডেট সময় : ০৯:১২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

নিজেস্ব প্রতিনিধি:

ঈদ মানেই হাসি-খুশি আর আনন্দ। ঈদের দিন মুসলমানরা আনন্দ উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সঃ)ঘোষণার মাধ্যমেই দ্বিতীয় হিজরীতে ঈদ উৎসবের গোড়াপত্তন হয়। আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ( সাঃ) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় এলেন, তখন তিনি দেখলেন, সেখানকার মানুষ বছরে দু’টি নির্দিষ্ট দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ উপভোগ করে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ দু’টি দিন কেমন? তারা বলেন, আমরা ইসলাম আগমনের পূর্বে এ দু’টি দিনে খেলা-তামাশা ও আনন্দ উপভোগ করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, আল্লাহ এ দু’টি দিনের পরিবর্তে দু’টি উৎকৃষ্ট দিন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। একটি ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি ঈদুল আজহা। (আবু দাউদ, নাসায়ী)।আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঈদ অর্থ বারবার ফিরে আসা। তবে শব্দটি উৎসব অর্থে প্রসিদ্ধি পেয়েছে। এমনকি পবিত্র কুরআনেও শব্দটি আনন্দঘন উৎসব অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ঈদ কেবল আনন্দ উৎসবের নাম নয়, বরং ইবাদত-বন্দেগির দ্বারা মহান আল্লাহর অনুগ্রহ, ক্ষমা ও সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম। ঈদুল ফিতরের এই আনন্দ উৎসবও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আর ইবাদতময় এই আনন্দ উৎসব থেকে আরও কল্যাণ লাভের জন্য প্রয়োজন হলো মহান আল্লাহর বিধান এবং রাসুল (সা.) এর সুন্নতের অনুসরণ। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে ঈদের প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং যেভাবে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন আমাদের জন্যও করণীয় হলো সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া এবং উদ্‌যাপন করা। ঈদের দিন বেশ কিছু আমল রয়েছে, যার মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়। একই সঙ্গে সমাজে প্রচলিত কিছু কাজ রয়েছে, যার সঙ্গে ঈদের কোনো সম্পর্ক নেই।
ঈদ মুসলমানদের একটি ওয়াজিব ইবাদত,তাই ঈদে আনন্দ উৎযাপন করার পদ্ধতি হতে হবে হালাল এবং রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত তরীকায়।
ঈদে আমাদের যা করণীয় :
আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া এবং তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সকল প্রকার মনোমালিন্য দূর করার জন্য ঈদ হল একটা বিরাট সুযোগ। এমনকি কেউ বিচ্ছিন্ন থাকলেও তার সঙ্গে অন্যরা যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সাঃ) বলেন, ‘যে আখেরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে। ’
ঈদুল ফিতর উৎসবের একটি তাৎপর্যময় অঙ্গ হলো ফিতরা বিতরণ।গরিব দুঃখীর মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম সদকাতুল ফিতর। সমাজের দুস্থ, অসহায়, দরিদ্ররাও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন, সে জন্য সদকাতুল ফিতর বা ফিতরার বিধান।
প্রত্যেক সমর্থ্য মুসলমানের জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই এই ফিতরা পরিশোধ করতে হবে। ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ‘প্রিয়নবী (সাঃ) লোকেদের ঈদের নামাযের জন্য বের হওয়ার পূর্বে ফিতরার যাকাত আদায় দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
ঈদে প্রত্যেকের জন্য নতুন পোশাক ও বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা থাকে তাই এতিম ছেলে-মেয়েরাও এই দিনে বিশেষ আশা নিয়ে থাকে নতুন পোশাক ও বিশেষ খাবারের। ঈদের দিন এতিমের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের খাবার খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে তাদের নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দিতে সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসতে হবে।
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষকে খুশি করা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। তাছাড়া ইসলামে উপহার লেনদেন করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা এতে পারস্পারিক ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
এছাড়াও ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকে তাকবির পাঠ করা, ঈদের দিন গোসল করা, নতুন বা পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা,ঈদের দিন ফজরের নামাজ আদায় করা, ঈদগাহে যাবার পূর্বে কিছু খাওয়া, হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া, ঈদের খুতবা শ্রবণ করা সুন্নত।
ঈদে আমাদের যা বর্জন করতে হবে:
কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঈদ উপলক্ষে সবকিছুতেই অপচয়-অপব্যয় করা,অশ্লীল পোষাক পরিধান করা,ঈদের সালাত আদায় না করে কেবল আনন্দ ফুর্তি করা, ঈদের আনন্দে মদ খাওয়া, জুয়া খেলা, আতশবাজি করা,আত্মীয়স্বজনের খোঁজ না রাখা,ঈদের আনন্দের অজুহাতে ঈদের দিন বাদ্যযন্ত্র বাজানো, নাচানাচি করা,বিনোদনের নামে খোলা ট্রাকের উপর ডিজে পার্টিতে হৈ-হুল্লোড় করে গান-বাজনা করা, পটকা ফুটানো এই ধরণের নিষিদ্ধ কাজগুলে থেকে বিরত থাকতে হবে।ঈদে এমন কোন কাজ করা যাবে না যাতে আশেপাশের মানুষেরা কোনভাবে কষ্ট পায়। এছাড়া ঈদের দিন আনন্দের নামে যে কোনো ধরনের অশ্লীল কাজ-কর্ম বর্জন করা মুমিন মুসলমানের জন্য আবশ্যক।