ঢাকা ০৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ হয়ে ছয় বছরের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাকৃবির পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে ৩০ খামারীকে প্রশিক্ষণ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত, দশজন আহত ঢাকা সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, জরিমানা সরকারি শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয়ে নতুন অধ্যক্ষের যোগদান সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে — মির্জা আলমগীর ডাক্তার শহিদুল আলমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জি এম আব্বাস উদ্দিন ঢাকা সাভারে জামিনে বের হয়ে বাদীর স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের বিশেষ অভিযানে পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ২৫ দেশে প্রথমবারের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি

ইউরোপীয় রঙিন সবজির নতুন জাত উন্নয়নে কাজ করছে বাকৃবি

নিজেস্ব প্রতিনিধি : রিসালাত আলিফ
  • আপডেট সময় : ০৩:২১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ ৩০ বার পড়া হয়েছে

বাকৃবি প্রতিনিধি: শীতকালীন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি ও ব্রোকলি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং ভিটামিন ও খনিজের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আমাদের দেশে বহুদিন ধরে সবুজ ব্রোকলির চাষ হয়ে আসছে। এবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও তাঁর গবেষক দল শীতকালীন রঙিন সবজি হিসেবে স্যাভয় ক্যাবেজ, বেগুনি ব্রোকলি এবং দেশীয় জাতের জুকিনি/স্কোয়াশ উদ্ভাবনে কাজ করছেন।

স্যাভয় ক্যাবেজ নিয়ে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ফ্রান্সের স্যাভয় ক্যাবেজ বাংলাদেশে একদম নতুন একটি শীতকালীন সবজি যা সফলতার সাথে চাষে আমরা সক্ষম হয়েছি। সাধারণ বাঁধাকপির পাতাগুলো পরিপক্ক হলে কিছুটা শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু স্যাভয় ক্যাবেজের পাতাগুলো মচমচে হওয়ায় এটি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় ও রান্না করে খেলেও সুস্বাদু লাগে। এছাড়াও বিভিন্ন ফাস্ট ফুডে যেমন বার্গার, স্যান্ডউইচ ইত্যাদির সাথে খাওয়া যায়।’

বেগুনি ব্রোকলি নিয়ে অধ্যাপক জানান, ‘বেগুনি ব্রোকলি দেশে প্রথমবারের মতো চাষের উপযোগী জাত হিসেবে বাছাই করা হচ্ছে। জাতটি ইংল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এর বৃদ্ধির হার সবুজ ব্রোকলির চেয়ে বেশি। বেগুনি ব্রোকলি স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি। এর বেগুনি রঙের কারণে এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে অ্যান্থোসায়ানিন, বিদ্যমান। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান সমৃদ্ধ, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।’

স্যাভয় ক্যাবেজ ও বেগুনি ব্রোকলি নিয়ে গবেষণায় কাজ করেছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও রিসার্চ ফেলো হিসেবে দায়িত্বরত মোছা: ফাতেমা তুজ জোহুরা।

‘এছাড়া লাল বাঁধাকপির জাতও রয়েছে, যা বর্তমানে মাঠপর্যায়ে চাষ করা হচ্ছে। রঙিন হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ সাধারণ (সবুজ) বাঁধাকপির তুলনায় বেশি। এটি মালচিং প্রক্রিয়ায় চাষ করা হয়েছে, যার ফলে পানি সংরক্ষণ করে ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে এবং পানির অপচয় রোধ হয়েছে।’ তিনি আরো যোগ করেন।

জুকিনি নিয়ে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘স্কোয়াশ, যা ইতালিতে জুকিনি নামে পরিচিত, ইউরোপীয় দেশগুলোতে পিজ্জা ও পাস্তায় ব্যবহৃত হয়।’ দশটি বিভিন্ন রঙের জুকিনির জাত নিয়ে গবেষণা করেছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আনিশা নূর মুমু।

অধ্যাপক আরো বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, দেশীয় আবহাওয়ায় এর বৃদ্ধি ও বিকাশ অত্যন্ত ভালো। বাজারে সাধারণত সবুজ রঙের জুকিনি বেশি পাওয়া যায়, তবে গবেষণার মাধ্যমে কালো, হলুদ, গাঢ় সবুজ, হালকা সবুজ বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতির জুকিনি উৎপাদন করা হয়েছে। মাত্র ৫৫ দিনেই জুকিনি সংগ্রহ করা সম্ভব।’

রঙিন জুকিনি নিয়ে গবেষণার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ জানান, ‘এই গবেষণার অর্থায়নের জন্য আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রঙিন জুকিনি বাছাই এবং জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এটি দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমি এই প্লাটফর্মটি তৈরী করেছি এ দেশের সাধারণ মানুষের কন্ঠস্বর হিসাবে পরিচালিত করার জন্য।আমরা অবিরত থাকবো সততা নিয়ে সত্যের সাথে। দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা এ দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত গনমানুষের কথা বলবে এবং সত্য প্রকাশে থাকবে আপোষহীন।
ট্যাগস :

ইউরোপীয় রঙিন সবজির নতুন জাত উন্নয়নে কাজ করছে বাকৃবি

আপডেট সময় : ০৩:২১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

বাকৃবি প্রতিনিধি: শীতকালীন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি ও ব্রোকলি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং ভিটামিন ও খনিজের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আমাদের দেশে বহুদিন ধরে সবুজ ব্রোকলির চাষ হয়ে আসছে। এবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও তাঁর গবেষক দল শীতকালীন রঙিন সবজি হিসেবে স্যাভয় ক্যাবেজ, বেগুনি ব্রোকলি এবং দেশীয় জাতের জুকিনি/স্কোয়াশ উদ্ভাবনে কাজ করছেন।

স্যাভয় ক্যাবেজ নিয়ে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ফ্রান্সের স্যাভয় ক্যাবেজ বাংলাদেশে একদম নতুন একটি শীতকালীন সবজি যা সফলতার সাথে চাষে আমরা সক্ষম হয়েছি। সাধারণ বাঁধাকপির পাতাগুলো পরিপক্ক হলে কিছুটা শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু স্যাভয় ক্যাবেজের পাতাগুলো মচমচে হওয়ায় এটি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় ও রান্না করে খেলেও সুস্বাদু লাগে। এছাড়াও বিভিন্ন ফাস্ট ফুডে যেমন বার্গার, স্যান্ডউইচ ইত্যাদির সাথে খাওয়া যায়।’

বেগুনি ব্রোকলি নিয়ে অধ্যাপক জানান, ‘বেগুনি ব্রোকলি দেশে প্রথমবারের মতো চাষের উপযোগী জাত হিসেবে বাছাই করা হচ্ছে। জাতটি ইংল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এর বৃদ্ধির হার সবুজ ব্রোকলির চেয়ে বেশি। বেগুনি ব্রোকলি স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি। এর বেগুনি রঙের কারণে এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে অ্যান্থোসায়ানিন, বিদ্যমান। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান সমৃদ্ধ, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।’

স্যাভয় ক্যাবেজ ও বেগুনি ব্রোকলি নিয়ে গবেষণায় কাজ করেছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও রিসার্চ ফেলো হিসেবে দায়িত্বরত মোছা: ফাতেমা তুজ জোহুরা।

‘এছাড়া লাল বাঁধাকপির জাতও রয়েছে, যা বর্তমানে মাঠপর্যায়ে চাষ করা হচ্ছে। রঙিন হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ সাধারণ (সবুজ) বাঁধাকপির তুলনায় বেশি। এটি মালচিং প্রক্রিয়ায় চাষ করা হয়েছে, যার ফলে পানি সংরক্ষণ করে ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে এবং পানির অপচয় রোধ হয়েছে।’ তিনি আরো যোগ করেন।

জুকিনি নিয়ে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘স্কোয়াশ, যা ইতালিতে জুকিনি নামে পরিচিত, ইউরোপীয় দেশগুলোতে পিজ্জা ও পাস্তায় ব্যবহৃত হয়।’ দশটি বিভিন্ন রঙের জুকিনির জাত নিয়ে গবেষণা করেছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আনিশা নূর মুমু।

অধ্যাপক আরো বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, দেশীয় আবহাওয়ায় এর বৃদ্ধি ও বিকাশ অত্যন্ত ভালো। বাজারে সাধারণত সবুজ রঙের জুকিনি বেশি পাওয়া যায়, তবে গবেষণার মাধ্যমে কালো, হলুদ, গাঢ় সবুজ, হালকা সবুজ বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতির জুকিনি উৎপাদন করা হয়েছে। মাত্র ৫৫ দিনেই জুকিনি সংগ্রহ করা সম্ভব।’

রঙিন জুকিনি নিয়ে গবেষণার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ জানান, ‘এই গবেষণার অর্থায়নের জন্য আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রঙিন জুকিনি বাছাই এবং জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এটি দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই