ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মানিকছড়ি উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মদিন পালন গোমদন্ডী দরবারে জিকরে মোস্তফা সম্মেলন সোমবার জামালপুর মাদারগঞ্জে তারতাপাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী গৌ- মইদৌড় খেলা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা আশুলিয়ায় হিজড়া সম্প্রদায়ের মানববন্ধন, বাৎসরিক ওরশ শরীফে বাঁধা ও চাঁদার দাবি বিবেকানন্দ ষ্টাডি এন্ড ফিলানফ্রপিক সেন্টার অব নিউইয়র্ক উদ্যোগ কম্বল বিতরণ যশোরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন উদযাপন নীলফামারীতে আন্তঃজেলা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকীতে বাকৃবিতে নিম গাছ রোপণ সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীমান্ত জব্দ হওয়া বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য ধ্বংস ঢাকা সাভারে পুলিশের অভিযানে সোয়া ২ টন নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

আজ বিডিআর হত্যাদিবস 😭

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১০২ বার পড়া হয়েছে

আজ সেই পিল খানার নির্মম হত্যা দিবস।

প্রকাশকঃ দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সৈনিক এবং অফিসারদের পরিবার পরিজনেরা।
নিহতের পরিবার পেয়েছি একটা লাশ আর এক বুক কস্ট যে কষ্ট নিঃস্বাসকেও আটকে দেয়।
বাংলাদেশের পুরো চিত্র ছিলো কাঁন্না আর আহাজারি। পুরো বাংলা সেদিন নেমে এসেছিলো এক শোকের চাঁদর।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নির্মমহত্যা দিবস।
সে দিনের আর কিছু কথা-
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের বিভিন্ন জায়গায় একযোগে বিডিআর সদস্যরা বিদ্রোহ করলেও সবচেয়ে বেশি নৃশংসতা হয়েছে ঢাকায় বিডিআর সদরদপ্তরে।
সে ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদকেও হত্যা করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনী এবং আনসার বাহিনীতে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় নৃশংসতা ছিল সবচেয়ে বেশি।

প্রশ্ন হচ্ছে, সে বিদ্রোহের পর থেকে কী শিক্ষা হয়েছে এসব বাহিনীতে?
বিডিআর বিদ্রোহের পর সে বাহিনী পূর্ণগঠনের সময় সেটির নাম বদলে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) রাখা হয়।

এছাড়া বাহিনীর ইউনিফর্মও পরিবর্তন করা হয়। কর্মকর্তারা মনে করেন, যে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে সেটিকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য এ দুটো পরিবর্তন জরুরী ছিল।

কিন্তু সে ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক।

বিদ্রোহের ঘটনার একদিন পরেই বিডিআর-এর মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয় তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুল ইসলাম।

যিনি পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট জেনারেল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন।

মি: ইসলাম বলেন, নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন, সৈনিক এবং
অফিসারদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজে।
তাঁর বর্ণনায়, “আমি ওদেরকে প্রায়ই বলতাম, তোমাদের সব আছে। তোমাদের খাওয়া আছে, বেতন আছে, অস্ত্র আছে। আমি জিজ্ঞেস করতাম, তোমাদের কী নাই? বললো, সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে যে বিশ্বাস সে জিনিসটা চলে গেছে।”

পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে অফিসার এবং সৈনিকরা পরস্পরকে প্রতিপক্ষ মনে করা শুরু করেছিল।

সৈনিকদের কাছে যদি কোন গুলি ভর্তি অস্ত্র থাকতো, সেটি অফিসারদের মনে ভীতি সঞ্চার করতো।

সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বিডিআর পোস্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মেহেরপুর সীমান্ত পরিদর্শনের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন।

মি: ইসলাম বলেন, ” উপরের কোন অফিসার বিওপিতে গেলে সকলে অস্ত্র নিয়ে নিজ-নিজ পজিশনে চলে যায়। এবং অস্ত্রের মধ্যে তারা গুলি নিয়ে যায়। সেখানে মেশিনগানের মধ্যে তার গুলি লাগানো। আমার সাথে যে এডিসি ছিল, সে আমার কাপড় ধরে টানতেছে। আমি বলি, কী ব্যাপার? এমন করছো কেন? সে বলে, স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে। আমি তাকে বললাম সরে যাও।”

“তারপর আমি মেশিনগানের সামনে গেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সৈনিক মনোবল কেমন? এই মেশিনগানের গুলি কার জন্য? সে বলে, স্যার সীমান্তের ওপার থেকে কেউ যদি আসে তার জন্য। আমি বললাম, তোমরা তো এই ব্যবহার করলা নিজেদের অফিসারদের উপরে। এটা কেমন কথা? সে বললো, স্যার বড় ভুল হইছে,” বলছিলেন মি: ইসলাম।
তাঁর বর্ণনায়, “আমি ওদেরকে প্রায়ই বলতাম, তোমাদের সব আছে। তোমাদের খাওয়া আছে, বেতন আছে, অস্ত্র আছে। আমি জিজ্ঞেস করতাম, তোমাদের কী নাই? বললো, সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে যে বিশ্বাস সে জিনিসটা চলে গেছে।”

পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে অফিসার এবং সৈনিকরা পরস্পরকে প্রতিপক্ষ মনে করা শুরু করেছিল।

সৈনিকদের কাছে যদি কোন গুলি ভর্তি অস্ত্র থাকতো, সেটি অফিসারদের মনে ভীতি সঞ্চার করতো।

সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বিডিআর পোস্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মেহেরপুর সীমান্ত পরিদর্শনের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন।

মি: ইসলাম বলেন, ” উপরের কোন অফিসার বিওপিতে গেলে সকলে অস্ত্র নিয়ে নিজ-নিজ পজিশনে চলে যায়। এবং অস্ত্রের মধ্যে তারা গুলি নিয়ে যায়। সেখানে মেশিনগানের মধ্যে তার গুলি লাগানো। আমার সাথে যে এডিসি ছিল, সে আমার কাপড় ধরে টানতেছে। আমি বলি, কী ব্যাপার? এমন করছো কেন? সে বলে, স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে। আমি তাকে বললাম সরে যাও।”

“তারপর আমি মেশিনগানের সামনে গেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সৈনিক মনোবল কেমন? এই মেশিনগানের গুলি কার জন্য? সে বলে, স্যার সীমান্তের ওপার থেকে কেউ যদি আসে তার জন্য। আমি বললাম, তোমরা তো এই ব্যবহার করলা নিজেদের অফিসারদের উপরে। এটা কেমন কথা? সে বললো, স্যার বড় ভুল হইছে,” বলছিলেন
মি: ইসলাম।

বিডিআর বিদ্রোহের আগে সৈনিকদের তরফ থেকে কিছু লিফলেট বিতরণ করা হয়েছিল।

কিন্তু সেগুলোকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি তৎকালীন বিডিআর-এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

মইনুল ইসলাম বলেন, যে কোন সুশৃঙ্খল বাহিনীতে ছোট-খাটো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

“লিফলেটের ভাষা ছিল খুবই কঠোর। কুকুরের মতো গুলি করে মারা হবে। এই লিফলেটটাকে কেন এতো আন্ডার প্লে করা হলো?”

তিনি মনে করেন, ছোটখাটো বিষয়গুলো আমলে নেয়া উচিত।

বিচারের জন্য আদালতে নেয়ার সময় বিডিআর সদস্যরা।

মি: ইসলাম বলেন, সৈনিকদের প্রতি অফিসারদের আচরণ কেমন হবে সে বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে বলে তিনি মনে করেন।

“আপনাকে যদি আমি এক কাপ চা সাধি, আপনাকে যে চা দিয়ে গেল, হয়তো আমাদের কেউ রান্নাঘর থেকে চা দিয়ে গেল। চা যদি পছন্দ না হয় আপনি সেটা খাবেন না। অথবা আপনি বলতে পারেন, চা যে চিনি দেন বা চিনি বেশি হয়ে গেছে বদলী করে দেন। আপনি কি তাঁর মুখে চা ফেলে দেবেন? এটা হয়না কোন দিন। এ ধরণের ছোটখাটো ঘটনাগুলো ওভারলুক করা হয়েছিল,” বলছিলেন মি: ইসলাম।

এই ঘটনা থেকে একটি বড় শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যারা নেতৃত্বে আছেন তারা অধীনস্থদের কথা শুনতে হবে।

বিডিআর এর ডাল-ভাত কর্মসূচী নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সৈনিকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ ছিল বলে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে।

মইনুল ইসলাম বলেন, ” সৈনিকদের সাথে লিডারের সম্পর্ক হবে আত্মিক। যখন এটা টাকা-পয়সার দিকে চলে যাবে, তখন একটা বাহিনীতে সমস্যার সৃষ্টি হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমি এই প্লাটফর্মটি তৈরী করেছি এ দেশের সাধারণ মানুষের কন্ঠস্বর হিসাবে পরিচালিত করার জন্য।আমরা অবিরত থাকবো সততা নিয়ে সত্যের সাথে। দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র পত্রিকা এ দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত গনমানুষের কথা বলবে এবং সত্য প্রকাশে থাকবে আপোষহীন।
ট্যাগস :

আজ বিডিআর হত্যাদিবস 😭

আপডেট সময় : ০৬:০৬:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আজ সেই পিল খানার নির্মম হত্যা দিবস।

প্রকাশকঃ দৈনিক বাংলাদেশের চিত্র।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সৈনিক এবং অফিসারদের পরিবার পরিজনেরা।
নিহতের পরিবার পেয়েছি একটা লাশ আর এক বুক কস্ট যে কষ্ট নিঃস্বাসকেও আটকে দেয়।
বাংলাদেশের পুরো চিত্র ছিলো কাঁন্না আর আহাজারি। পুরো বাংলা সেদিন নেমে এসেছিলো এক শোকের চাঁদর।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নির্মমহত্যা দিবস।
সে দিনের আর কিছু কথা-
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের বিভিন্ন জায়গায় একযোগে বিডিআর সদস্যরা বিদ্রোহ করলেও সবচেয়ে বেশি নৃশংসতা হয়েছে ঢাকায় বিডিআর সদরদপ্তরে।
সে ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদকেও হত্যা করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনী এবং আনসার বাহিনীতে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় নৃশংসতা ছিল সবচেয়ে বেশি।

প্রশ্ন হচ্ছে, সে বিদ্রোহের পর থেকে কী শিক্ষা হয়েছে এসব বাহিনীতে?
বিডিআর বিদ্রোহের পর সে বাহিনী পূর্ণগঠনের সময় সেটির নাম বদলে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) রাখা হয়।

এছাড়া বাহিনীর ইউনিফর্মও পরিবর্তন করা হয়। কর্মকর্তারা মনে করেন, যে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে সেটিকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য এ দুটো পরিবর্তন জরুরী ছিল।

কিন্তু সে ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক।

বিদ্রোহের ঘটনার একদিন পরেই বিডিআর-এর মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয় তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুল ইসলাম।

যিনি পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট জেনারেল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন।

মি: ইসলাম বলেন, নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন, সৈনিক এবং
অফিসারদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার কাজে।
তাঁর বর্ণনায়, “আমি ওদেরকে প্রায়ই বলতাম, তোমাদের সব আছে। তোমাদের খাওয়া আছে, বেতন আছে, অস্ত্র আছে। আমি জিজ্ঞেস করতাম, তোমাদের কী নাই? বললো, সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে যে বিশ্বাস সে জিনিসটা চলে গেছে।”

পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে অফিসার এবং সৈনিকরা পরস্পরকে প্রতিপক্ষ মনে করা শুরু করেছিল।

সৈনিকদের কাছে যদি কোন গুলি ভর্তি অস্ত্র থাকতো, সেটি অফিসারদের মনে ভীতি সঞ্চার করতো।

সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বিডিআর পোস্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মেহেরপুর সীমান্ত পরিদর্শনের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন।

মি: ইসলাম বলেন, ” উপরের কোন অফিসার বিওপিতে গেলে সকলে অস্ত্র নিয়ে নিজ-নিজ পজিশনে চলে যায়। এবং অস্ত্রের মধ্যে তারা গুলি নিয়ে যায়। সেখানে মেশিনগানের মধ্যে তার গুলি লাগানো। আমার সাথে যে এডিসি ছিল, সে আমার কাপড় ধরে টানতেছে। আমি বলি, কী ব্যাপার? এমন করছো কেন? সে বলে, স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে। আমি তাকে বললাম সরে যাও।”

“তারপর আমি মেশিনগানের সামনে গেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সৈনিক মনোবল কেমন? এই মেশিনগানের গুলি কার জন্য? সে বলে, স্যার সীমান্তের ওপার থেকে কেউ যদি আসে তার জন্য। আমি বললাম, তোমরা তো এই ব্যবহার করলা নিজেদের অফিসারদের উপরে। এটা কেমন কথা? সে বললো, স্যার বড় ভুল হইছে,” বলছিলেন মি: ইসলাম।
তাঁর বর্ণনায়, “আমি ওদেরকে প্রায়ই বলতাম, তোমাদের সব আছে। তোমাদের খাওয়া আছে, বেতন আছে, অস্ত্র আছে। আমি জিজ্ঞেস করতাম, তোমাদের কী নাই? বললো, সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে যে বিশ্বাস সে জিনিসটা চলে গেছে।”

পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল যে অফিসার এবং সৈনিকরা পরস্পরকে প্রতিপক্ষ মনে করা শুরু করেছিল।

সৈনিকদের কাছে যদি কোন গুলি ভর্তি অস্ত্র থাকতো, সেটি অফিসারদের মনে ভীতি সঞ্চার করতো।

সৈনিক এবং অফিসারদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক দেশের বিভিন্ন সীমান্তে বিডিআর পোস্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মেহেরপুর সীমান্ত পরিদর্শনের একটি ঘটনা উল্লেখ করেন।

মি: ইসলাম বলেন, ” উপরের কোন অফিসার বিওপিতে গেলে সকলে অস্ত্র নিয়ে নিজ-নিজ পজিশনে চলে যায়। এবং অস্ত্রের মধ্যে তারা গুলি নিয়ে যায়। সেখানে মেশিনগানের মধ্যে তার গুলি লাগানো। আমার সাথে যে এডিসি ছিল, সে আমার কাপড় ধরে টানতেছে। আমি বলি, কী ব্যাপার? এমন করছো কেন? সে বলে, স্যার মেশিনগানে গুলি লাগানো আছে। আমি তাকে বললাম সরে যাও।”

“তারপর আমি মেশিনগানের সামনে গেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সৈনিক মনোবল কেমন? এই মেশিনগানের গুলি কার জন্য? সে বলে, স্যার সীমান্তের ওপার থেকে কেউ যদি আসে তার জন্য। আমি বললাম, তোমরা তো এই ব্যবহার করলা নিজেদের অফিসারদের উপরে। এটা কেমন কথা? সে বললো, স্যার বড় ভুল হইছে,” বলছিলেন
মি: ইসলাম।

বিডিআর বিদ্রোহের আগে সৈনিকদের তরফ থেকে কিছু লিফলেট বিতরণ করা হয়েছিল।

কিন্তু সেগুলোকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি তৎকালীন বিডিআর-এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

মইনুল ইসলাম বলেন, যে কোন সুশৃঙ্খল বাহিনীতে ছোট-খাটো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

“লিফলেটের ভাষা ছিল খুবই কঠোর। কুকুরের মতো গুলি করে মারা হবে। এই লিফলেটটাকে কেন এতো আন্ডার প্লে করা হলো?”

তিনি মনে করেন, ছোটখাটো বিষয়গুলো আমলে নেয়া উচিত।

বিচারের জন্য আদালতে নেয়ার সময় বিডিআর সদস্যরা।

মি: ইসলাম বলেন, সৈনিকদের প্রতি অফিসারদের আচরণ কেমন হবে সে বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে বলে তিনি মনে করেন।

“আপনাকে যদি আমি এক কাপ চা সাধি, আপনাকে যে চা দিয়ে গেল, হয়তো আমাদের কেউ রান্নাঘর থেকে চা দিয়ে গেল। চা যদি পছন্দ না হয় আপনি সেটা খাবেন না। অথবা আপনি বলতে পারেন, চা যে চিনি দেন বা চিনি বেশি হয়ে গেছে বদলী করে দেন। আপনি কি তাঁর মুখে চা ফেলে দেবেন? এটা হয়না কোন দিন। এ ধরণের ছোটখাটো ঘটনাগুলো ওভারলুক করা হয়েছিল,” বলছিলেন মি: ইসলাম।

এই ঘটনা থেকে একটি বড় শিক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যারা নেতৃত্বে আছেন তারা অধীনস্থদের কথা শুনতে হবে।

বিডিআর এর ডাল-ভাত কর্মসূচী নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সৈনিকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ ছিল বলে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে।

মইনুল ইসলাম বলেন, ” সৈনিকদের সাথে লিডারের সম্পর্ক হবে আত্মিক। যখন এটা টাকা-পয়সার দিকে চলে যাবে, তখন একটা বাহিনীতে সমস্যার সৃষ্টি হবে।”